এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিজ্ঞান সৃজনশীল মডেল টেস্ট -৪০
বিজ্ঞান
সিনিয়র শিক্ষক, মিরপুর বাংলা উচ্চ মাধ্যমিক
বিদ্যালয়, ঢাকা
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর অনুশীলন
১.
প্রশ্ন : বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিয়ের
জন্য মেয়েদের বয়স কম পক্ষে ১৮ বছর এবং ছেলেদের জন্য কমপক্ষে ২১ বছর। কিন্তু এ আইন
থাকা সত্ত্বেও আমাদের দেশের অধিকাংশ মেয়েদের মা-বাবা ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই তাদের
বিয়ে দিয়ে দেন।
ক. গর্ভধারণ কী?
খ. রয়ঃসন্ধিকাল বলতে কী বোঝ?
গ. অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ করলে কী কী সমস্যা
হতে পারে তা তোমার নিজের ভাষার আলোচনা কর।
ঘ. অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ থেকে পরিত্রাণের
উপায় বর্ণনা কর।
ক. গর্ভধারণ হচ্ছে শরীরের একটি বিশেষ
পরির্বতন। সন্তান গর্ভে এলেই শুধু শরীরেরই বিশেষ পরিবর্তন ঘটে।
খ. মানুষের জীবনকালে প্রথমে সে থাকে শিশু,
পরে শিশু থেকে ধাপে ধাপে বৃদ্ধ অবস্থায় উপনীত হয়। সাধারণত পাঁচ বছর পর্যন্ত
শৈশবকাল। ছয় থেকে দশ বছর পর্যন্ত বয়সকে বলা হয় বাল্যকাল। দশ বছর বয়সের পর একটি
মেয়েকে কিশোরী এবং একটি ছেলেকে কিশোর বলা হয়। মানুষের জীবনে এ সময়কে বয়ঃসন্ধিকাল
বলে।
গ. উ : অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ করলে যে
সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা নিম্নে দেয়া গল-
১. স্বাস্থ্য সমস্যা : অপরিণত বয়সে গর্ভধারনের
ফলে তার গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ, শরীরে পানি আসা, খুব বেশি ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা।
গর্ভপাত ইত্যাদি ঘটতে পারে। তা ছাড়া তার ও সন্তানের মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে।
অপরিণত বয়সে গর্ভে সন্তান আসার কারণে
সন্তান বেড়ে ওঠার জন্য গর্ভে পর্যাপ্ত জায়গা পাবে না। ফলে কম ওজনের শিশু জন্ম
নেবে। এ ধরনের শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এবং শিশু স্বাস্থ্যবান ও সবল
মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠেতে পারে না।
২. শিক্ষাগত যোগ্যাতা : বিদ্যালয়ে পড়ার সময়
যদি কোনো মেয়ে গর্ভধারণ করে তবে সে লজ্জায় আর বিদ্যালয়ে যায় না। তার মানসিক চাপ
বেড়ে যায় এবং সে অশান্তিতে ভোগে। শারীরিক দিক থেকেও সে চলাফেরা করতে সমস্যায় পড়ে।
এসব কারণে সে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়।
৩. পারিবারিক সমস্যা : অপরিণত বয়সে
গর্ভধারণের কারণে সে সুস্থভাবে অন্যান্য কাজকর্ম করতে পারে না। অসুস্থ হয়ে পড়ার
কারণে তার পরিবারে অশান্তি দেখা দিতে পারে।
৪. আর্থিক সমস্যা : গর্ভধারণের ৯ মাসজুড়ে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। এ ছাড়া কোনো জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিলে বারবার
চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। চিকিৎসক ও ওষুধ পথ্যের জন্য বেশ অর্থের প্রয়োজন হয়।
গর্ভবতী মায়ের জন্য অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘ. উ : গর্ভধারণ থেকে পরিত্রাণের জন্য
নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।
১. পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি।
২. ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
৩. স্বামী-স্ত্রীকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
৪. কঠোর আইন প্রণয়ন।
৫. মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলা।
৬. অপরিণত বয়সে গর্ভধারণের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি
সম্পর্কে অবহিত করা।
৭. বিয়ের ব্যাপারে ছেলেমেয়ে অভিভাবকদের
সচেতন থাকা।
২.
প্রশ্ন : প্রচণ্ড মাথাব্যথার কারণে উপমা
জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া ডাক্তার তার সিটি স্ক্যান করতে
বললেন। মেয়ের এ অবস্থা দেখে উপমার বাবাও বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলেন। ডাক্তার
তার জন্য ইসিজি করার পরামর্শ দিলেন।
ক. MRI -এ চৌম্বক ক্ষেত্র কী করে?
খ. MRI -বলতে কী বোঝায়?
গ. ডাক্তার উপমার জন্য যা করতে বললেন তা
কীভাবে কাজ করে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মেয়ে ও বাবার জন্য ডাক্তার ভিন্ন ধরনের
পারমর্শ দিলেন কেন? যুদ্ধিসহ মতামত দাও।
উ. ক. মানব শরীরের পানিকে বিশেষ পদ্ধতিতে
চৌম্বকায়িত করে।
উ. খ. MRI( Magnetic Resonance Imaging) হল
একটি কৌশল যা শরীরের যে কোনো অঙ্গের (বিশেষ করে নবম বা সংবেদনশীল) তার পরিষ্কার ও
বিস্তারিত ছবি তুলতে পারে। এটি যে কোনো অঙ্গের জন্য ব্যবহার করা হলেও মস্তিষ্ক,
পেশি, যোজক কলা এবং টিউমার শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়।
উ. গ. ডাক্তার উপমাকে সিটিস্ক্যান করতে
বলেন। আলোর প্রতিসরণের সঙ্গে জ্যামিতিক হিসেবের মাধ্যমে দ্বিমাত্রিক ছবিগুলোকে
এখানে ত্রিমাত্রিক করা হয়।
ধাপগুলো হল-
i. এক্স-রেতে একটি রশ্মি ছোড়া হয় কিন্তু
সিটিস্ক্যানে একটির পরিবর্তে একগুচ্ছ রশ্মি ছোড়া হয়।
ii. এ রশ্মিগুলো একটি অক্ষরে কেন্দ্র করে
বিভিন্ন দিক নিক্ষেপ করে ছবি তোলে।
iii. দ্বিমাত্রিক এই ছবিগুলোর গাণিতিক
হিসাবের মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক রূপ দেয়া হয়।
রা. ফলে কোনো বস্তুর অবস্থান নিখুঁতভাবে
নির্ণয় করা হয়।
উ. ঘ. মেয়ের মাথাব্যথার জন্য সিটিস্ক্যান
এবং বাবার জন্য ইসিজি করতে বলেন ডাক্তার। মস্তিষ্কের ভেতর অনেক সূক্ষ্ম স্থান যা
বোঝার জন্য CT Scan বা computed Tomo graphy Scan অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সিটিস্ক্যানের মাধ্যমে কোন পেশি বা অস্থির স্থান পরিবর্তন অস্থির টিউমার,
অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ নিখুঁতভাবে জানা যায়। মাথায় কোনো আঘাতে মাস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ
হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য সিটিস্ক্যান করা হয়। অন্যদিকে ইসিজি বা
ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম হচ্ছে অত্যন্ত সহজ, ব্যথাবিহীন একটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে
হৃৎপিণ্ডের বর্তমান বা পূর্বের সমস্যা বোঝা যায়। এর মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ
করছে কিনা তা বোঝা যায়। মেয়ের সমস্যা মাথায় এবং বাবার সমস্যা হৃৎপিণ্ডে হওয়ায়
সমস্যা সমাধানে দুই ধরনের পদ্ধতি দিয়ে ডাক্তার সমস্যা
নির্ণয়ের পরামর্শ দিলেন।
No comments